সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন প্রাইজবন্ডের ১২১তম ড্র: প্রথম পুরস্কার জিতেছেন ০১০৮৩৩১ নম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত: পাঁচ শরিয়াহ ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিলের কারণে গ্রাহকদের সেবা অব্যাহত থাকবে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করল ডিএসই ও চিটস্টক দুর্বল ৫ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিপূরণ পাবেন ৭ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রগতির মাইলফলক: মির্জা ফখরুল নাহিদ ইসলাম: জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না মির্জা ফখরুলের অভিযোগ: সরকার নির্বাচন ব্যাহত করতে নিজেই পরিস্থিতি তৈরি করছে বিএনপি গণভোটে আলোচনা করতে রাজি নয়, জামায়াতের হামিদুর রহমানের দাবি জনমত গঠনে রাজপথে জামায়াত: হামিদুর রহমান
পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকদের সেবা অক্ষুণ্ণ থাকবে

পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকদের সেবা অক্ষুণ্ণ থাকবে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে ফেললেও সাধারণ গ্রাহকদের সেবা স্থবির হবে না। ব্যাংকগুলোর পেমেন্ট, রেমিট্যান্স, এলসিসহ সকল ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম আগের মতোই চালু থাকবে। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব জানান।

গভর্নর বলেন, বোর্ড বাতিল হলেও ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন কার্যক্রম বন্ধ হবে না। অর্থাৎ, ব্যবসা চলমান থাকবে, পেমেন্ট, রেমিট্যান্স ও এলসি সবই স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো ব্যাংকগুলোকে ধাপে ধাপে সম্পদ ও আইটি সিস্টেমের একীভূতকরণ সম্পন্ন করে বিষয়গুলো সমন্বয় করা।

গভর্নর জানান, এই পাঁচটি ব্যাংকের মোট ৭৫০টি শাখা ও প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারী রয়েছে। লিকুইডেশন এড়াতে প্রথম ধাপে কাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত একীভূতিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘নন-ভায়েবল’ বা টেকসই নয় বলে ঘোষিত পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিটি ব্যাংকে অস্থায়ী অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সকালে ব্যাংকগুলোর কোম্পানি সেক্রেটারিকে ‘নন-ভায়েবিলিটি’ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, এর মাধ্যমে বোর্ডের কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়েছে এবং তারা আর কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।

গভর্নর উল্লেখ করেন, এই পাঁচ ব্যাংক একত্রিত হলে এটি দেশের বৃহত্তম ইসলামिक ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পাবে, যার পেইড-আপ ক্যাপিটাল হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা—যা বর্তমানে দেশের যেকোনো ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি নিশ্চিত করেছেন, এই নতুন ব্যাংকটি সরকারীয় মালিকানাধীন হলেও পরিচালনায় বেসরকারি ব্যাংকের মতো পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। এটি পরিচালনা করবেন পেশাদার এন্ডমডি, বাজারভিত্তিক বেতন কাঠামো এবং পৃথক শরিয়া বোর্ড। তিনি বলেন, আমরা মনে করি—ইসলামী ব্যাংকিং বাংলাদেশের ভবিষ্যত।

শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য এখন নেগেটিভ। ফলে, শেয়ারের মূল্য জিরো বিবেচনা করা হবে এবং কারও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।’

আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারী সব গ্রাহক তাদের টাকা সম্পূর্ণরূপে তুলতে পারবেন। বড় আমানতের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ থাকবে। এ বিষয় বিস্তারিত পরে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানানো হবে। তিনি সকলকে উৎসাহিত করেন, প্রয়োজনীয়তার জন্যই অর্থ উত্তোলন করুন এবং উদ্বিগ্ন না থাকতে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়কালে যদি নতুন সরকার পরিবর্তন হয়, তাহলে এই প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা প্রশ্নে তিনি জানান, দেশের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। সরকারি পরিবর্তন ছাড়া, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ চলবে।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষণা করেছে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ও আর্থিক দুর্বলতার কারণে শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে এই ব্যাংকগুলোকে চিঠি পাঠিয়েছে এবং তাদের পক্ষ থেকে এ বিষয় নিশ্চিত করা হয়েছে।

চিঠিতে জানানো হয়েছে, ৫ নভেম্বর থেকে এই ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং তারা এখন ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় পরিচালিত হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, একীভূত করে একটি নতুন সরকারি মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংক গঠন করা হবে, যার নাম হবে ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক’। এই প্রক্রিয়ায় আজকের দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়।

এছাড়াও, গত ৯ অক্টোবর সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর, এই ব্যাংকগুলো বন্ধের জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এক বছর ধরে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। তারল্য সংকট, বিশাল পরিমাণ শ্রেণিকৃত ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি এবং মূলধন ঘাটতিতে ভুগছে। এর ফলে, ব্যাংকগুলো কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় এসে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, তাদের শেয়ারবাজার মূল্য পড়ে গেছে এবং নেট এ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd